৩ বৃদ্ধকে কান ধরিয়ে অপমান-অসম্মানের শাস্তি প্রত্যাহার তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা



মাস্ক না পরায় তিন বৃদ্ধকে কান ধরিয়ে শাস্তিদান এবং সে দৃশ্য নিজের মোবাইলে ধারণকারী যশোরের মনিরামপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (এসি, ভূমি) সাইয়েমা হাসানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাকে খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে দ্য ডেইলি স্টারকে আজ জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন।
পাশাপাশি ঘটনাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে যশোরের জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এপ্রিলের ৪ তারিখে অফিস খোলার পর তদন্ত সাপেক্ষে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ ছাড়াও, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই তিন বৃদ্ধের কাছে মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারও (ইউএনও) ক্ষমা চাওয়া উচিত। প্রয়োজনে তাদেরকে মাস্ক ও অর্থ দিয়ে সহায়তা করতে হবে বলেও জানান তিনি।
জনপ্রশাসন সচিব আরও বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্য একটি ফেসবুক পেজের মাধ্যম আমরা মাঠ পর্যায়ে সব কর্মকর্তাকে নির্দেশনা প্রদান করেছি।’
গতকাল শুক্রবার মাস্ক ব্যবহার না করায় তিন বৃদ্ধকে জনসম্মুখে কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রেখে শাস্তি দেন সহকারী কমিশনার (এসি, ভূমি) সাইয়েমা হাসান। তিনি নিজেই আবার সে চিত্র তার মুঠোফোনে ধারণ করেন। পরে, এ ঘটনার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনা ও নিন্দা শুরু হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইয়েমা হাসানের নেতৃত্বে গতকাল বিকাল থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত মনিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার চিনাটোলা বাজারে অভিযানের সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে পড়েন দুই বৃদ্ধ। এর মধ্যে একজন বাইসাইকেল চালিয়ে আসছিলেন। অপরজন রাস্তার পাশেই বসে সবজি বিক্রি করছিলেন। তাদের মুখে মাস্ক ছিল না।
পুলিশ সে সময় ওই দুই বৃদ্ধকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইয়েমা হাসান শাস্তি হিসেবে তাদের জনসম্মুখে কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখেন। একইসঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিজেই তার মুঠোফোনে এ চিত্র ধারণ করেন। পরবর্তীতে আরও একজন বৃদ্ধ ভ্যানচালককে অনুরূপভাবে কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখেন তিনি।
স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে বয়স্ক তিন জনকে এ শাস্তি দেওয়ার ব্যাপারটি স্বীকার করেন সহকারী কমিশনার সাইয়েমা হাসান।
মনিরামপুর উপজেলার ইউএনও আহসান উল্লাহ শরিফী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বয়স্ক তিন জনকে কান ধরিয়ে দাঁড় করানোর বিষয়টি দুঃখজনক। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ বলেন, ‘ছবিটি আমি দেখেছি। এটি তিনি করতে পারেন না। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা আমাদের কাজ নয়। তাকে শোকজ করা হবে।

Post a Comment

0 Comments