ইউরোপের ক্লাব ফুটবলের সর্বোচ্চ আসর উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজের প্রথম মৌসুমটা এরলিং ব্রাট হালান্ডের কাটছে স্বপ্নের মতো। একের পর এক জালের ঠিকানা খুঁজে নিয়ে রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়ে চলেছেন এই তরুণ। প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজি) বিপক্ষে জোড়া গোল করে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের ১৯ বছর বয়সী স্ট্রাইকার নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়।
মঙ্গলবার রাতে ঘরের মাঠ সিনিয়াল ইদুনা পার্কে ফরাসি লিগ চ্যাম্পিয়নদের ২-১ গোলে হারিয়েছে জার্মান ক্লাব ডর্টমুন্ড। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর প্রথম লেগের ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে দুবার লক্ষ্যভেদ করে নেইমার-কিলিয়ান এমবাপেদের হারের তেতো স্বাদ দেন হালান্ড।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এবারের মৌসুমে মাত্র সাত ম্যাচ খেলে হালান্ডের গোল দশটি। প্রতিযোগিতার ইতিহাসে এত দ্রুত দশ গোল আর কেউ করতে পারেননি।
মাত্র ১৯ বছর ২১২ দিন বয়সে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দশ গোল করার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন হালান্ড। তার চেয়ে এগিয়ে আছেন কেবল একজনই। পিএসজির ফরাসি স্ট্রাইকার এমবাপে দশ গোল পূর্ণ করেছিলেন ১৮ বছর ৩৬০ দিন বয়সে।
এই মৌসুমেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অভিষেক হয়েছে নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার হালান্ডের। গ্রুপ পর্বে অস্ট্রিয়ার ক্লাব সালজবুর্গের হয়ে খেলেছিলেন তিনি। দলটির হয়ে ছয় ম্যাচে করেছিলেন আট গোল। প্রথম ম্যাচেই বেলজিয়ান ক্লাব গেঙ্কের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে আলোচনায় উঠে আসেন তিনি।
প্রতিযোগিতার পরের চার ম্যাচেও জালের দেখা পান হালান্ড। এতে আলেসান্দ্রো দেল পিয়েরো ও দিয়েগো কস্তার পর মাত্র তৃতীয় ফুটবলার হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজের প্রথম পাঁচ ম্যাচে গোল করার কীর্তি গড়েন তিনি।
গেল জানুয়ারিতে শীতকালীন দলবদলে সালজবুর্গ থেকে ডর্টমুন্ডে নাম লেখান হালান্ড। দলটির হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ অভিষেকে জোড়া গোল করায় আরও একটি রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন তিনি। ডর্টমুন্ডের হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সাত ম্যাচে ১১ গোল রয়েছে তার নামের পাশে। জার্মান বুন্দেসলিগার কোনো দলে নাম লিখিয়ে এত কম ম্যাচে এতগুলো গোল আর কেউ করতে পারেননি।
টিনএজার হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এক মৌসুমে সবচেয়ে বেশি গোল করার রেকর্ড অবশ্য আগেই গড়েছেন হালান্ড। আগের রেকর্ডের যৌথ মালিক ছিলেন এমবাপে ও রাউল গঞ্জালেজ। তারা দুজনেই ছয়টি করে গোল পেয়েছিলেন।
একাধিক কীর্তি গড়ে প্রশংসার জোয়ারে ভেসে গেলেও তরুণ স্ট্রাইকার পা রাখছেন মাটিতে। পিএসজির বিপক্ষে জয়ের পর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের কাছে হালান্ড বলেছেন, আরও উন্নতি করতে মুখিয়ে আছেন তিনি, ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ হতে পেরে আমি আনন্দিত। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে, আরও ভালো করতে পারি আমি। (পেশাদার ফুটবলের) এই পর্যায়ে আরও ভালো খেলতে হবে আমাকে, উন্নতি করতে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।’
0 Comments