সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধোনির সঙ্গে তুলনা কে বাড়াবাড়ি মনে করেন: আকবর



হোক না ছোটদের, তার হাত ধরেই যে বাংলাদেশ জিতেছে কোন বিশ্বকাপ। এই অর্জনে উদ্বেল তাই দেশের মানুষ। বাংলাদেশ যুব দলের অধিনায়ক আকবর আলি দেশকে বিশ্বকাপ পাইয়ে দিতে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে খেলেন ৭৭ বলে ৪৩ রানের ইনিংস। ম্যাচের পরিস্থিতি বিচারে যে তেতাল্লিশের মাহাত্ম অনেক বড়। মাথা ঠাণ্ডা রেখে পরিস্থিতি সামলানোর সামর্থ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতের মহেন্দ্র সিং ধোনির সঙ্গেও তুলনা করা হচ্ছে তাকে। তবে এসব ‘বাড়াবাড়ি’ তুলনায় আগ্রহ নেই তার। দেশকে বিশ্বকাপ জেতানো আকবর দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে মুঠোফোনে দেওয়া একান্ত সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন পা মাটিতে রেখেই এগুতে চান তিনি। যুব দলের অধিনায়ক কথা বলেছেন ম্যাচ শেষে ঘটা অনাকাঙ্খিত ঘটনা নিয়েও।      
আপনার হাত ধরে বাংলাদেশ একটা বিশ্বকাপ পেল, অনুভূতি কেমন?
আকবর আলি: এসব অনুভূতি তো আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। আমি চেষ্টা করেছি নিজের সেরাটা দিয়ে খেলতে। খেলায় অনেক কিছুই হতে পারত, কিন্তু আমরা জানতাম নিজেদের কাজটা করতে পারলে আমাদের বড় সুযোগ আছে। আমরা এই ম্যাচ নিয়ে যেসব পরিকল্পনা করেছিলাম তা ঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারায় কাজটা হয়েছে।
একাধিকবার বলেছেন গত দুই বছরে অনেক প্রস্তুতি নিয়ে গিয়েছিলেন, তবু একেবারে বিশ্বকাপ জেতার বিশ্বাস ছিল?
আকবর:  বিশ্বাস ছিল ভেতরে। কারণ আমরা গত এক বছর থেকে অনেক ভালো ক্রিকেট খেলে আসছি। জানতাম বিশ্বকাপে গিয়েও ভালোভাবে ক্রিকেট খেলতে পারব। আর যেটা বলতেই হয়, ক্রিকেট বোর্ডকে কৃতিত্ব দেওয়া দরকার। কারণ তারা আমাদের জন্য এতগুলো ম্যাচ আয়োজন করেছে। আমরা সেরা প্রস্তুতির সুযোগ পেয়েছি। যার ফল মিলেছে বিশ্বকাপে। কাজেই ক্রিকেট বোর্ডের কৃতিত্ব পাওয়া উচিত।
প্রচণ্ড চাপের মধ্যে ফাইনালে ৭৭ বলে ৪৩ রানের  ইনিংস খেললেন, দলকে বিশ্বকাপ জেতালেন। ব্যাট করতে নামার সময় কি চিন্তা খেলা করছিল মাথায়?    
আকবর: অতো বেশি চিন্তা করিনি। একদম সহজ পরিকল্পনা করেছি। যেহেতু অনেকগুলো উইকেট পড়ে গিয়েছিল কাজেই ঝুঁকি নেওয়ার সুযোগ ছিল না, সেইফ ক্রিকেট খেলতে হতো। আমাদের জন্য সুবিধা হয়েছে দ্রুত রান নেওয়ার কোন তাড়াও ছিল না, বল অনেক ছিল হাতে। সেদিক থেকে বলব যে শুধু উইকেট আঁকড়ে পড়ে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
পারভেজ হোসেন ইমনের সঙ্গে জুটির সময় কি কথা হচ্ছিল দুজনের?
আকবর: ওর সঙ্গে কথা হচ্ছিল যে কোন ঝুঁকিপূর্ণ রান নেব না। হাফ রান নেব না, যদি নিশ্চিত এক হয় সেটাই নেব। এরপরে সেরকম কোন স্বীকৃত ব্যাটসম্যান ছিল না । আমাদের দুজনকেই খেলাটা এগিয়ে নিতে হতো। সেটাই আমরা চেষ্টা করছিলাম।
৬ উইকেট নেই, তখনো অনেক রান লাগত। ড্রেসিং রুম থেকে কি বার্তা দেওয়া হচ্ছিল?
আকবর: খুব সাধারণ। যেটা বললাম হাতে উইকেট রেখে খেলতে হবে। তাদের মূল দুই বোলারকে দেখে খেলার কথা বলা হয়েছে। তাদের লেগ স্পিনারটা খুব ভালো বল করছিল, তাকে উইকেট না দেওয়ার প্ল্যান ছিল। তাহলে অন্য দিক থেকে রান আসবে।
এই ইনিংসের পর ধোনির সঙ্গে আপনার তুলনা করছেন অনেকে, এটা কীভাবে দেখছেন?
আকবর: এটা একদম বাড়াবাড়ি ভাই (হাসি)।
ধোনির মতো আপনিও উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান, অধিনায়ক। তাহলে কাকে অনুসরণ করেন? 
আকবর: সেভাবে কাউকে অনুসরণ করি না। নিজের মতোই থাকতে চাই। এমনিতে অনেকের খেলাই ভালো লাগে কিন্তু অনুসরণ করি না। আমার প্রিয় ক্রিকেটার এবিডি ভিলিয়ার্স।
ম্যাচ শেষের একটা ঘটনা নিয়ে আলাপ হচ্ছে, আসলে কি হয়েছিল?
আকবর: অপ্রত্যাশিত একটা ব্যাপার (দুদলের খেলোয়াড়দের মধ্যে হাতাহাতির পরিস্থিতি) হয়ে গিয়েছিল মাঠের মধ্যে। যেটা না হলেই ভালো হতো। ফাইনাল ম্যাচ, এইজন্য হয়ত অনেকের মধ্যে আবেগ চলে আসছিল। আমরাও ভুল করেছি, ভারতের খেলোয়াড়রাও ভুল করেছে। আমি বলব এটা আগামীর জন্য একটা ভালো শিক্ষা ছিল। পরে আর এমন করা যাবে না।
বিশ্বকাপ ট্রফি কাউকে উৎসর্গ করতে চান? 
আকবর: ওরকম কিছু না। এটা একটা খেলা, কেবল একটা ক্রিকেট খেলা। যদি কাউকেই উৎসর্গ করতেই হয় তাহলে বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তদের করা যায়।

Post a Comment

0 Comments