সেই লিটন এখন আর নেই


তার স্কিল, সামর্থ্য নিয়ে কারোরই বোধহয় সংশয় নেই। লিটন দাসের ঘাটতি ছিল ধারাবাহিকতায়, তুখোড় প্রতিভা দিয়েও নিজেকে যেন অন্য ধাপে নিতে পারছিলেন না। ব্যাটিংয়ের ঘাটতির মতো কথাবার্তাতেও ছিল অপরিণতের ভাব। কিন্তু তা এখন আর নেই। চিন্তার জগত বদলে গত বিপিএল থেকেই হয়ে উঠেছেন গোছানো। এবার ব্যাটিংয়েও দেখা মিলল সেই ছাপ। দৃষ্টি সুখকর সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশকে জিতিয়ে আসার পর লিটন বললেন, দুই বছর আগের সেই তিনি এখন আর নেই।
রোববার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে লিটনের ১২৬ রানের ইনিংসে ৩২১ করে ১৬৯ রানে জিম্বাবুয়েকে হারায় বাংলাদেশ।৩৪তম ওয়ানডেতে এসে লিটন পেলেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ২০১৮ সালে এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে খেলা ১২১ রানের মন্ত্রমুগ্ধ ইনিংসও ছাড়িয়ে গেলেন এবার।
চেনা পরিমণ্ডলের বাইরে কথা বলায় স্বচ্ছন্দ ছিলেন না। সেটা বদলেছে অনেকটা। তবে কথার চেয়ে বদলেছে চিন্তার ধরণ। এখন নাকি তিনি খেলাটা আরও ভালো করে বুঝতে পারেন, পরিণত হয়েছেন আরও। ম্যাচ সেরা হয়ে নিজেই জানালেন নিজের উত্তরণের কথা,  ‘কথা তো সবার সঙ্গেই বলতাম। হয়তো যারা বন্ধু, তারা বেশ বুঝত আমাকে। অপরিচিত লোকজনের সঙ্গে কথা কম বলি। যেটুকু প্রয়োজন, ততটাই বলি। 
পরিবর্তন বলতে, বিপিএলের সময়ও বলেছি যে পরিনয়ের আরেক ধাপ (বেড়েছে) …ক্রিকেট খেলা দেখলে অনেক সময় বোঝা যায়। আপনারাও বুঝবেন, যে লিটন দুই বছর আগে ছিল, সেই লিটন এখন আর নেই। আউট হব, রান করব, এসব ক্রিকেটের স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু খেলার যে ধরন, সেটা মনে হয় পরিবর্তন হয়েছে। আমি যেটা বুঝতে পারছি।’খেলা শেষ হয়ে গেলে আগে নিজের ব্যাটিং দেখতেন না।
এখন সেখানেও এসেছে বদল। প্রতি ম্যাচের পর ভিডিও দেখে বের করেন ভুলত্রুটি, ‘আমি আগে দেখতাম না নিজের খেলা। এক বছর হলো, দেখি। বিপিএল বলেন, তার আগে, এসব থেকে আমি নিজের খেলা রিভিউ করি। বুঝি যে আমার ব্যাটিংয়ে অনেক ভুল আছে। কোন ব্যাপারগুলো বদলানো যায়।’
ব্যাট করতে নামার পর আগে অতসতো না ভেবে মেরে খেলতেন। এখন সেই চিন্তার জগত গেছে বদলে। এই ম্যাচে যেমন ৩০ ওভার খেলার লক্ষ্য নিয়েই নেমছিলেন, এই বদলই ফল এনে দিয়েছে তাকে, 'আমার এখন মূল ব্যাপারটা হলো, আমি জানি যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০০ করতে হলে আমার অন্তত ৩০ ওভার ব্যাট করতে হবে। 
যে কোনো দলের সঙ্গেই। মাথায় ছিল সেটিই যে ৩০ ওভার পর্যন্ত স্বাভাবিক ক্রিকেট খেলব। জোরাজুরি করব না। সিঙ্গেল খেলব, মারার বল পেলে কাজ লাগাব। প্রথম লক্ষ্যই ছিল ৩০ ওভার। শুরুতে নার্ভাস তো ছিলামই, কিন্তু পরে থিতু হওয়ার পর ঠিক করেছি যে ৩০ ওভার পর্যন্ত টানব।'

Post a Comment

0 Comments