জিম্বাবুয়ে সিরিজে না থাকার কারণ পাচ্ছেন না মুশফিক

মুশফিকুর

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের সিরিজে মুশফিকুর রহিমের থাকা-না থাকা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন
, বিসিবির প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু এমনকি বাংলাদেশের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর কথাতও আভাস, মুশফিক না-ও থাকতে পারেন ঘরের মাঠের টেস্টে। সাদা পোশাকে যিনি বাংলাদেশের অটোমেটিক চয়েজ, তাকে নিয়ে এমন দোলাচল বিস্ময়েরই! তবে আগের দিন সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ক্রিকেট বিষয়ক ভারতীয় গণমাধ্যম ক্রিকবাজের কাছে মুশফিক বলেছেন, জিম্বাবুয়ে সিরিজে না থাকার কোনো কারণ দেখতে পাচ্ছেন না তিনি।
হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটের কারণে ঘরোয়া ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক প্রথম শ্রেণির আসর বিসিএলের প্রথম রাউন্ডে খেলা হয়নি তার। তবে সে চোট কাটিয়ে ফিরেছেন অনুশীলনে, দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার জন্য নিজেকে করছেন তৈরি। নিরাপত্তা শঙ্কায় পাকিস্তানে না যাওয়া মুশফিক তাকিয়ে আছেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের দিকে, ‘আমার ফিটনেস টেস্ট আছে দু-একদিনের মধ্যে। যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে, তাহলে আমি বিসিএলের দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলব। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে না খেলার কোনো কারণ দেখছি না। ওই সিরিজকে সামনে রেখে প্রস্তুত হচ্ছি আমি। আমি ফিট থাকব এবং দলে জায়গা পাওয়ার জন্য তৈরি থাকব। আমাকে জায়গা পাব কি-না সেটা আমার হাতে নেই কিন্তু আমি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলার চেষ্টা করব এবং শুধু টেস্টে নয়, যেহেতু আমাদের পূর্ণাঙ্গ একটি সিরিজ আছে, সব ফরম্যাটের জন্যই আমাকে পাওয়া যাবে।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে মুশফিকের থাকা-না থাকা নিয়ে অদ্ভুতুড়ে আলোচনার শুরুটা হয় প্রধান নির্বাচকের মন্তব্যের পর। তিনদিন আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের দল ঘোষণার সময় মিনহাজুল বলেছিলেন, এই একই দল চলতি মাসের শেষে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে আগামী এপ্রিলে করাচি টেস্টে খেলবে। অথচ নিরাপত্তা শঙ্কায় ও পরিবারের সায় না পেয়ে পাকিস্তানে তিন দফার সফর থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন মুশফিক। সিরিজের সূচি চূড়ান্ত হওয়ার আগেই বিসিবিকে নিজের অবস্থান জানিয়েছিলেন তিনি। বোর্ডও তখন জানিয়েছিল, তারা কাউকে পাকিস্তানে যেতে জোর করবেন না। তাই সেখানে না গেলেও বাংলাদেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ে বিপক্ষে স্বাভাবিকভাবেই খেলার কথা মুশফিকের।
কিন্তু মিনহাজুলের আগে বোর্ড প্রধান নাজমুল আকার-ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দেন, মুশফিক পাকিস্তান সফরে না যাওয়াতে বিসিবি খুশি নয়। প্রথম দফায় টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাজেভাবে বাংলাদেশ হেরে যাওয়ার পর তিনি বলেছিলেন, বারবার ব্যাটিং-অর্ডার পাল্টাতে তারা ইচ্ছুক নন। রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট খেলতে পাকিস্তানে যাওয়ার আগে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে আগের দিন প্রধান কোচ ডমিঙ্গোও জানান, একাদশে ধারাবাহিকতা চান তারা, আনতে চান না খুব বেশি পরিবর্তন। অর্থাৎ মুশফিককে নিয়ে ধোঁয়াশা থাকছেই।
গণমাধ্যমে গুঞ্জন চললেও, টেস্টে বাংলাদেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ তারকা মুশফিক বলেন, জিম্বাবুয়ে সিরিজে তাকে ঘিরে যে সংশয় আছে, সে বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না আর শেষ পর্যন্ত যদি বাদও পড়েন, তবে পারফর্ম করেই ফিরে আসবেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাকে কেউ কিছু বলেনি এসব বিষয়ে। আর তারা (বোর্ড ও কোচ) যদি অন্য কোথাও এসব বলেও থাকেন, সেসব কোনো বিষয় না। দিনশেষে তারা যেভাবে বলবেন, আমি সেভাবেই কাজ করব এবং যদি তারা এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেন (আমাকে বাদ দেওয়ার) তাহলে আমি জিজ্ঞেস করব কেন (বাদ দেওয়া হলো) এবং সে অনুসারে কাজ করব যেন পরের সিরিজে আমি ফিরে আসতে পারি।’
দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৬৯ টেস্ট খেলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪ হাজার ২১০ রান করেছেন মুশফিক। সবশেষ টেস্ট সিরিজে ভারত সফরে বাংলাদেশ ধরাশায়ী হলেও তিনি পেয়েছিলেন দুটি হাফসেঞ্চুরি, সবমিলিয়ে করেছিলেন ১৮১ রান।

Post a Comment

0 Comments